অবশেষে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দুর্ণীতি দমন ও টাউট কমিটির সুনিপুণ কৌশলের ফাঁদে ধরা পড়ে ভূয়া ব্যারিস্টার কামরুল ইসলাম হৃদয়।
আইন বিষয়ে লেখাপড়া শেষ করেও আইনজীবী হতে পারছেন না অনেকেই। বার কাউন্সিলের সনদ পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে বছরের পর বছর। কিন্তু রাষ্ট্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে প্রতারণার কুচক্র মহল যারা জনগণের কাছ থেকে নানা প্রলোভনে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তেমনি এক ব্যক্তি ব্যারিস্টার কামরুল ইসলাম।
জানা গেছে, আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সংবাদ প্রকাশের কথা বলে কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছ থেকে মুঠোফোনে খরচ বাবদ অর্থ দাবি করছেন। ভুক্তভোগী কাউন্সিলরদের কয়েকজন গণমাধ্যমকে জানালে তারা নিশ্চিত হয়ে দাবি করেন যে এরা আদৌতে গণমাধ্যমকর্মী নয়। সূত্রঃ ১৯ জানুয়ারী ২০২১ দৈনিক পূর্বকোণ।
এদিকে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরী সম্পাদক আলী আকবরের সামনে ধৃত ভূয়া ব্যারিস্টার কামরুল ইসলাম হৃদয় দাবি করছেন, তাঁর এসব কাজে সহযোগী মাস্টার-মাইন্ড ছিলেন মোস্তাফিজ যিনি তাকে দিয়ে বিয়ে-ডিভোর্স নানা হাবিজাবি কাজ করানোর মাধ্যমে ক্লাইন্টদেরকে প্ররোচিত করে তাদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতে তাকে প্রভাবিত করত।
দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের কার্যে লিপ্ত থেকে সাধারণ মানুষকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতেন বলে জানান চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরী সম্পাদক আলী আকবর।
তিনি আরো জানান, কামরুল ইসলাম সাংবাদিক ও সম্পাদক পরিচয়ে নিজের নামে ভিজিটিং কার্ড ও সোশ্যাল মিডিয়াতে ফেইক আইডি খুলে আইনী তথ্য প্রচার করতেন।
ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম রনি জানান যে ডিভোর্স দিতে আইনি সহায়তা করবে এমন প্রবঞ্চনা করে তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন ধাপে সর্বমোট ৯১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে সে আরেকজন উকিলের মাধ্যমে জানতে পারে ডিভোর্সটি হয়নি।
এর আগে অর্থাৎ গত ২৮ শে মে, ২০২১ তারিখে বিভিন্ন অনলাইন নিউস পোর্টালে দেখা যায়, তিনি আইন বিষয়ক কাগজের সংবাদপত্র ‘দ্যা ব্যারিস্টার’ বের করছেন। এ পত্রিকায় কেবল আইন সংক্রান্ত তথ্য, ছবি, আইনজীবীদের লেখা ও মতামত প্রকাশ করা হবে। এ কাগজের মূল্য তিনি বিশ টাকা নির্ধারণ করেছেন।
তাঁর প্রতারণার বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এর আগে জানানো হয়েছিল। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সভাপতি এম এ আমিন উদ্দিন স্যরের পরামর্শে কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন-২০১৮ এর ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৯ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
তাকে আটক করা সহজ হয়েছে বিশেষ করে চট্টগ্রাম আইনজীবী তোফাজ্জেল হোসেনের ভুক্তভোগী ক্লাইন্টদের প্রচেষ্টার ফলে। পরিশেষে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির দুর্ণীতি দমন ও টাউট কমিটি বিরতিহীনভাবে টানা ৪ ঘন্টা তারঁ পিছনে লেগে ছিল এবং তাঁকে ধরতে সমর্থ হয়।