ক্যান্সারের ভ্যাকসিন প্রতিরোধ এবং প্রতিকারের মধ্যকার রেখাটি স্পষ্ট করে দিয়েছে। করোনা ভ্যাকসিনের মতো সাধারণ ভ্যাকসিনগুলো শরীরের রোগপ্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং ক্ষতিকর কোষগুলোকে আক্রমণ করে। ক্যান্সার ভ্যাকসিনও একইভাবে কাজ করে। এটি শরীরে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ক্যান্সার কোষ শনাক্ত করতে শেখায়, ক্যান্সার ফিরে আসা আটকায় এবং টিউমার শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
করোনাভাইরাসরোধী ভ্যাকসিন তৈরিতে ফাইজার এবং মডার্নার ব্যবহৃত মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএ প্রযুক্তি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও কাজে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি তাদের সঙ্গে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথলাইন ডটকম।
আটলান্টার ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট অব আমেরিকার চিফ অব স্টাফ ডা. জেফ্রি এ মেটস হেলথলাইনকে বলেন, ক্যান্সার কোষগুলো প্রোটিন তৈরি করে, যা এমআরএনএ ভ্যাকসিনের লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। এক্ষেত্রে মেলানোমা (এক ধরনের স্কিন ক্যান্সার) চিকিৎসায় অগ্রগতির খবর পাওয়া গেছে। ‘তবে ক্যান্সার প্রতিকার প্রতিরোধের চেয়ে পুরোপুরি আলাদা। গত ১০ বছরে এইচপিভি ভ্যাকসিনে সচেতনতা, স্ক্রিনিং এবং ব্যবস্থাপনায় কী অর্জন হয়েছে তা দেখতে আমরা জরায়ু ক্যান্সারে নাটকীয় হ্রাসের দিকে নজর দিতে পারি। এইচপিভি ভ্যাকসিন দেখিয়ে দিয়েছে, আমরা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি এবং এটি ক্যান্সার সম্পর্কিত অবিশ্বাস্য কার্যকর একটি কৌশল। তবে এটি ক্যান্সার সারায় না।’
এমআরএনএ থেরাপিউটিকস এবং সিনথেটিক বায়োলজি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যান্ড থেরাপিউটিকসের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী জ্যাকব বেক্র্যাফট বলেন, এমআরএনএ কল্পনাযোগ্য যেকোনও প্রোটিনের সঙ্গে এনকোড করা যায়। আমরা টিউমার কোষগুলোতে এমআরএনএ সরবরাহ করতে পারি। এতে টিউমারগুলোতে এমন প্রোটিন তৈরি হবে, যা রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থার কাছে বহিরাগত জীবাণু হিসেবে সংকেত দেবে এবং টিউমার কোষকে আক্রমণ করতে বলবে।
তিনি বলেন, বিদ্যমান চিকিৎসায় আমাদের ল্যাবে সিনথেটিক প্রোটিন তৈরির দরকার হয়, যা টিউমারগুলোকে মেরে ফেলবে বা তাদের বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় করবে। এমআরএনএ প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা এধরনের যেকোনও সংখ্যক প্রোটিন এনকোড করতে পারি।