ঢাকা মহানগরের কর্মীরা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে বিক্ষোভ করেছে হেফাজতে ইসলাম। আজ শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে মসজিদের উত্তর গেটে জড়ো হয়ে গত শুক্রবারের ঘটনায় হতাহতদের বিচারের দাবি জানান তারা।
এসময় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, গত শুক্রবারের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে পুলিশ ও সরকারি দলের লোকেরা বাধা দিয়েছে। তাই আগামী রোববার ডাকা হরতালে বাধা দেয়া হলে এর পরিণতি ভালো হবে না বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমার অনেক ভাইয়ের রক্ত ঝরেছে। গোটা বাংলাদেশ স্তব্ধ। এমন জয়ন্তীতে সোনার ছেলেরা সন্ত্রাস এবং রক্তক্ষরণে অম্লান হয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকা। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের মানচিত্র এমন রক্তে রঞ্জিত হবে, এটা আমরা কেউ চাই নাই।”
“আমরা বারবার সরকারকে সর্তক করছিলাম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতো ঘাতককে জাতীয় দিবসে এনে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করবেন না। এ দেশের মানুষ নরেন্দ্রকে বরদাস্ত করবে না। যার হাতে ভারত এবং কাশ্মীরের অনেক মুসলিম মারা গেছে। গুজরাটের কসাই হিসেবে যাকে সবাই চিনে।”
মোদি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, প্রতিদিন বাংলাদেশের কাঁটাতারে ফেলানীর মতো লাশ ঝুলছে। এই কুখ্যাত মোদিকে আমরা বাংলাদেশে আনতে নিষেধ করেছিলাম। তারপরেও তাকে আনা হলো। জানি না, প্রধানমন্ত্রী কোন দায়ে দায়বদ্ধ। যে দায় স্বীকার করার জন্য বা যে দায়ের ঋণ পরিশোধ করার জন্য বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে কলঙ্কিত করে নরেন্দ্র মোদির পায়ের কাছে বিসর্জন দিলো।”
“গতকাল হাঠহাজারীতে চার জনের মৃত্যু ঘটেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রক্ত ঝরেছে আমার ভাইদের। বায়তুল মোকাররম জুমার নামাজের সময় সরকার দলীয় ছাত্র সমাজ যেভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে তাতে বুঝা যায় সন্ত্রাসের জনপদে রূপান্তর করেছে।”
তিনি বলেন, “সংবাদমাধ্যমে আপনারা দেখেছেন গত শুক্রবার দেশের বিভিন্ন জেলায় সরকারদলীয় লোকজন যেভাবে মহড়া দিয়েছে। ৫০ থেকে ২০০ হুন্ডা নিয়ে হেলমেট বাহিনী গোটা দেশে মহড়া দিয়ে এক আতঙ্কজনক অবস্থা তৈরি করেছে। কারা ছিল হেলমেট বাহিনী এদের পরিচয় জানতে চাই। যদি এমন করে আপনারা স্বাধীনতার দিবস এবং দেশের মানুষের স্বাধীনতা ছিনতাই করেন তাহলে হেলমেট বাহিনী পালানোর রাস্তা খুঁজে পাবেন না। সকল দায়িত্ব আপনাদের বহন করতে হবে।”
২০১৩ সালের ৫ মে এভাবে যারা কুরআন শরীফে অগ্নিসংযোগ করেছিল। যারা গুলিস্তান, পল্টন, মতিঝিল, দৈনিক বাংলায় হেফাজত কর্মীদের রক্তে ঝরিয়েছে তারাই আবার গতকাল মাঠে নেমেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানাতে চাই, আপনাদেরকে বাংলাদেশ লালন পালন করে। বাংলাদেশের টাকায় আপনাদের ভাতা হয়। আপনারা আমাদের জানমালের নিরাপত্তা দিবেন। আপনারা দেশের জন্য কাজ করবেন। কোনও দলের সেবা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ আপনাদের লালন পালন করে না।
এই দিনটি সবাই একসাথে পালন করার জন্য হেফাজত ইসলাম কোনও কর্মসূচি দেয় নাই। এছাড়া ইসলামী দলগুলো বিক্ষোভসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দিয়েও তা প্রত্যাহার করেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী সকলে মিলে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কিন্তু আপনারা করলেন কি ? বিনিময়ে কি দিলেন ? কি পেলাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে আল্লামা বাবুনগরী, মাওলানা নরুল ইসলাম, জুনায়েদ আল হাবিব রাজপথে নেমে এসছে। আমরা হরতালের কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। স্পষ্ট বলতে চাই, আজ এবং আগামীকাল তোমাদের পেটুয়া বাহিনী যদি এভাবে সন্ত্রাসের রাজত্ব করে তাহলে গোটা বাংলাদেশে আবার যুদ্ধ হবে।
যে সকল ভাইদের শহীদ করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।