রাঙ্গামাটি প্রতিনিধিঃ শাকিল মন্ডল ভূষনছড়া গণহত্যা দিবস ২০২১ উপলক্ষে শোক ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ভূষনছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আজ ঐতিহাসিক ভূষনছড়া গণহত্যা দিবস পালিত হয় ভূষনছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। এ সময় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্তিতি ছিলেন বরকল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জুয়েল রানা। ১৯৮৪ সালের ৩১ মে দিবাগত রাত আনুমানিক ৪টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা ৩০মিনিট পর্যন্ত সময়ে ঘুমন্ত মানুষের উপর রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় শান্তি বাহিনীর এরিয়া কমান্ডার তথাকথিত মেজর রাজেশ এর নেতৃত্বে পরিচালিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় ভূষণছড়া গণহত্যা করে ৩৮ হাজার বাঙ্গালীর হত্যাকারী খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা। সেদিন বাঙ্গালীদের প্রত্যেকটি গ্রামে অগ্নি সংযোগ সহ লুটতরাজ, সামনে বাঙ্গালী যাকে পেয়েছে তাকেই হত্যা করেছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ, নরকীয়তা সৃষ্টি করেছিলো খুনি সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এর সশস্ত্র সংগঠন শান্তি বাহিনীর গেরিলা যোদ্ধারা ও উপজাতি সন্ত্রাসী হায়নারা। যে ঘটনার মাধ্যমে মাত্র কয়েক ঘন্টা সময়ে ১৪৫০ জনের অধিক নারী, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ বনিতা নিরস্ত্র নিরীহ বাঙ্গালীকে হত্যা করা হয়েছে, বাঙ্গালী নারীদের গণধর্ষণ ও পরে হত্যা, আহত করা হয়েছে আরও সহস্রাধিক, অপহরণ ও গুম করা হয়েছে আরো কয়েক হাজার বাঙ্গালীকে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে একটি জনপদ। বরকলের ১৬০০ পরিবারের মধ্যে ৮০০টি পরিবার সেদিন আক্রান্ত হয়েছে। আর আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩০টি পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে যে, শান্তি বাহিনী সেদিন এতগুলো মানুষকে হত্যা করতে বুলেটের পাশাপাশি হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে, বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খোঁচিয়ে খোঁচিয়ে নানা ভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল এই অসহায় মানুষ গুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল তারা। পার্বত্য চট্টগ্রামের কয়েক শত বছরের ইতিহাস ঘাটলেও ভূষণছড়া গণহত্যার মতো এত বড় ধ্বংসযজ্ঞের আর কোন নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। এমনকি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানী হানাদাররাও এখানে এমন জঘন্যতম ঘটনার জন্ম দেয়নি। ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখা এবং বেচে যাওয়া কিছু কিছু সাক্ষী আজো আছে কিন্তু ঘটনার কথা মনে পড়লে আজও তাদের গায়ের পশম খাড়া হয়ে যায়।