নোয়াখালী প্রতিনিধি: রিয়াজ উদ্দিন রুবেল,নোয়াখালী সুবর্ণচর উপজেলার পূর্বচরবাটা ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামে ০১ নং ওয়ার্ডের প্রতিবন্ধী জসিম (৩০) কে দেয়া মুজিববর্ষের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবেনা সরকারের এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সুবর্ণচরে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রশাসন থেকে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও তাতে অনিয়মের অভিযোগ করছেন উপকারভোগী ও স্থানীয়রা।
এমন অনিয়মের অভিযোগ এনে শারীরিক প্রতিবন্ধী জসিম বলেন,মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে সরকারের দেয়া একটি ঘর নির্মাণে আমার নাম আসে। ঘরটি নির্মাণের সময় বালু ও সিমেন্ট পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়নি যার কারণে বর্ষার শুরুতে ঘরের পেছনের বেশকিছু অংশ ভেঙ্গে পড়ে। এরপর সেটি আবার মেরামত করা হয়। মেরামতের কিছুদিন পর ঘরের ভিবিন্ন অংশে ফাটল ধরে। এছাড়াও যারা এ ঘর নির্মাণে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেছেন তারা অদক্ষ শ্রমিক।
জসিমের স্ত্রী রানু (২৪) বলেন,আমার স্বামী একজন প্রতিবন্ধী। তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। ছোট একটি চায়ের দোকান করে কোনো রকমে সংসার চলে। ঘরে ছোট দুইটা ছেলে মেয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম কিন্তু এ ঘর নির্মাণে যেভাবে নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে এবং ঘরে যেভাবে ফাটল ধরেছে এতে এ ঘরে থাকা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন আমার স্বামী প্রতিবন্ধী তার আয় না থাকা স্বত্তেও ঘর নির্মাণের সময় প্রতিদিন ৩/৪ জন শ্রমিকদের সকালে নাস্তা ও দুপুরে ভাত খাওয়ানো লাগতো। বর্তমানে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদার মানিক বলেছে ১৬ ব্যাগ সিমেন্ট লাগবে এরমধ্যে ১০ ব্যাগ তিনি ব্যবস্থা করবেন বাকি ৬ ব্যাগ আমাদের দিতে হবে। কিন্তু আমার স্বামী এই ৬ ব্যাগ সিমেন্ট কি করে কিনবে। যদি সিমেন্ট না কিনা হয় তাহলে তারা কাজ করবেনা বলে জানিয়েছেন।
এমন অনিয়মের অভিযোগ শুনে সরেজমিনে জসিমের ঘর দেখতে যান উপজেলা সহকারি অফিসার (ভূমি) আরিফুর রহমান। তিনি ৬ জুলাই(মঙ্গলবার) বিকেলে ঘর পরিদর্শন করেন এবং পরিদর্শন শেষে তিনি অনিয়ম পাওয়া ঘরগুলো পূর্ণনির্মাণের আশ্বাস প্রদান করেন এবং অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভুক্তভোগীদের সমস্যা সমূহের সমাধান করবেন বলে আশ্বস্থ্য করেন।
এছাড়াও তিনি আরো জানান, আজ সুবর্ণচর উপজেলায় স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালন এর জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি মুজিব বর্ষের মোট ২০ টি ঘর পরিদর্শন করেছি। ঘরে কোন সমস্যা আছে কিনা বা কাজের মান দেখতে এই পরিদর্শন। আমরা সুবর্ণচর উপজেলায় একবারে প্রান্তিক পর্যায়ের গৃহহীনদের ঘর দেয়ার কারণে আমাদের ঘর গুলো বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। অনেকগুলো ঘর এমন জায়গায় দেয়া হয়েছে সেখানে হাটা ছাড়া অন্য যানবাহন নেই। এদের বাছাই করতে একবার হেটেছি আবার পরিদর্শন করতে হাটা শুরু করলাম। কষ্টের মধ্যে প্রাপ্তি গরীবের জন্য কিছু করার চেষ্টা। আমার ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম ইবনুল হাসান স্যার এর এই কাজে আন্তরিকতার কোন কমতি ছিল না এবং পরিশ্রম করতেও কোন কার্পণ্য ছিল না।
অন্য জায়গার মতো আমরা সবগুলো ঘর একই স্থানে ইচ্ছা করলেই করতে পারতাম। এতে হয়তো ঘর নির্মাণ এর ব্যয় ও কম হতো এবং মনিটরিং ও ভালো হতো আর পরিশ্রম ও কম হতো।
এই লকডাউন এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি ইনশাআল্লাহ মোট ১৫১ টি ঘরই পর্যায়ক্রমে পরিদর্শন করা হবে।