বগুড়া জেলা প্রতিনিধি : মাসুম বিল্লাহ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ মডেল ইউনিয়নের এলজিইডি আঞ্চলিক সড়কের পাশের সরকারি চৌদ্দটি গাছ কেটে নিয়েছেন প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতব্বর শফিকুল ইসলাম। শফিকুল ইসলাম জয়নগর দক্ষিণপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে। কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই বিগত দুই-তিনদিন ধরে ওই গাছগুলো কাটছেন তিনি। অথচ সংশ্লিষ্টদের সেদিকে নজর নেই। তাই অনেকটা নির্বিঘ্নেই সরকারি গাছগুলো কেটে নিয়ে গেলেন ওই গ্রাম্য মাতব্বর।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চলছে ব্যাপক সমালোচনা। সেইসঙ্গে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারি গাছ কাটার বিচার দাবি করেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গাড়ীদহ মডেল ইউনিয়নের জয়নগর দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আঞ্চলিক সড়কটির দুইপাশে রকমারি অসংখ্য গাছ রয়েছে। এরমধ্যে অন্তত চৌদ্দটি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে বিক্রয় করেছেন জয়নগর গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি শফিকুল ইসলাম। বিগত দুইদিন আগে হঠাৎ গাছগুলো কাটা শুরু করেন। স্থানীয় লোকজন কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই কেটে ফেলা গাছগুলো তরিঘরি করে বিক্রয় করে। বেশকয়েকজন শ্রমিক রাত-দিন সমানতালে এই কাজে অংশ নেন। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে সড়কের পাশের কাটা গাছগুলো সরিয়ে নিতে সক্ষম হলেও সাক্ষি গোপাল হিসেবে গাছের গোড়া এখনও সেখানে পড়ে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছু স্থানীয়রা জানান, গ্রাম্য মাতব্বর শফিকুল ইসলাম নিজেকে একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তি ভাবেন। ফলে নিয়ম-কানুন কোনো কিছুই তোয়াক্কা করেন না তিনি।
তাই অনুমোদন ছাড়াই সরকারি গাছগুলো কেটে নিয়ে গেছেন। কিন্তু ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেন না। এছাড়া ওই প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তার ওপর হামলা হয়। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানী করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কের পাশে যে জমিটি রয়েছে সেটি আমার। তাই জায়গাটি সরকারি হলেও বিগত দশ থেকে বারো বছর আগে গাছগুলো আমি লাগিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে গাছগুলো বেশ বড় হয়েছে। বর্তমানে আমার প্রয়োজনে গাছগুলো কটেছি। তাই সড়কের পাশে লাগানো গাছগুলোর মধ্যে মাত্র ১৪টি গাছ কেটে নিয়ে গেছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। এতে কারো কিছুই বলার নেই বলেও দাবি করেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এছাড়া সম্ভবত সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। তাই বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তীতে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, গাছ যেই লাগাক সড়কের মধ্যে বা সড়কের জায়গায় পড়লে তা সড়কের। অনুমোদন ছাড়া এই গাছ কেউ কাটতে পারবে না বলেও জানান এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।