কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : আরিফুল ইসলাম আরিফ ভোরের লতা-পাতা, ঘাস ও ফুলের পাপড়িতে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু মুক্তাদানার মত শিশির জানিয়ে দিচ্ছে শীতের আগমী বার্তা। শীতের আগমনের সাথে সাথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার গাছিরা। শীতের ভরা মৌসুমে রস সংগ্রহের জন্য শীতের আগমনের শুর“ থেকেই খেজুর রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে গাছিরা। বেড়েছে অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকা গ্রাম গঞ্জের খেজুর গাছের কদর। শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওযায় খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুর“ করে দিয়েছেন অনেকেই। রস সংগ্রহের জন্য গাছীরা হাতে দা ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে চাছা-ছেলা করেন এবং ছেলা স্থানে নল বসান এলাকার প্রতিটি বাড়ির খেজুর গাছে । বিকেলবেলা নলের সামনে রসের জন্য ছোট কলসি বসিয়ে দেয়া হয়। সন্ধ্যা থেকে সারারাত ফোটা ফোটা করে মিষ্টি খেজুরের রস কলসিতে জমা হয়ে ভরে যায়। ভোরবেলায় গাছিরা খেজুর গাছ থেকে সেই রসে ভরা কলসি পেরে ঘানিতে তিন থেকে চার ঘণ্টা জাল দিয়ে খেজুর রসের পাঠালি গুড় তৈরি করে।
শীতের মৌসুমে জুড়ে গ্রামাঞ্চলে খেজুরের রস দিয়ে ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবে নানান রকম পিঠা তৈরি করা হয়। ভাপা পিঠা, পুলি পিঠা, পাঠিসাপটা, রস পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরির ধুম পড়ে গেছে খেজুর গাছের রস আর গুড় দিয়ে। গ্রমের অঞ্চলের কোন কোন বাড়ীতে নতুন মেহমানদের ডেকে এনে খেজুর রসের তৈরী বিভিন্ন পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করে । এ রস অত্যন্ত সুস্বাধু ও মানব দেহের উপকারিতারর কারণে মানুষের কাছে অতি জনপ্রিয় হয়ে উঠে। তাই শীতকালে শহর থেকে মানুষ দলে দলে ছুটে আসতো গ্রাম বাংলার খেজুর রস খেতে।শীতের সকালে গ্রামীন পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠে।এছাড়াও শীতের সকালে খেজুর রসের গুড় দিয়ে তৈরী ভাপা পিঠা খেতে গ্রাম অঞ্চলের বাজারের দোকান গুলোতে বেশ ভীড় জমে।শীতের সকালে খেজুর রসের গুড় দিয়ে তৈরী ভাপা পিঠা খেতে গ্রাম অঞ্চলের বাজারের দোকান গুলোতে বেশ ভীড় জমে।
উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের হরির পাঠ, কবির মামুদ এলাকার রহিম,ময়েন ও মারফত গাছি জানান, এবারে ফুলবাড়ীতে আগেভাগেই শীত পড়েছে তাই খেজুর রস সংগ্রহ করতে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। খেজুর রস থেকে আমরা পাটালি গুড় তৈরি করছি।যা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ১২০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হয়। তবে গাছিরা বলছে শীত যত বেশি হবে খেজুরের রস ততবেশি পাওয়া যাবে। আগামী দুই মাস পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ করা যাবে বলে চাষিরা জানান ।