ঢাকা প্রতিনিধি : সুমন মোহাম্মদ ভয়ঙ্কর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার প্রবণতা বেড়েই চলছে। নিশ্চিত বিপদ জেনেও দালালদের লোভনীয় প্রস্তাব আর স্বপ্ন পূরণে যুব সমাজ ওই পথেই পা বাড়াচ্ছে। ফলে স্বপ্ন পূরণ তো দূরের কথা, আদম ব্যপারী বা দালালদের খপ্পরে পড়ে সব খুইয়ে অনেকেই নিঃস্ব হচ্ছেন। আবার গভীর সাগরে ডুবে মরায় অনেক মায়ের কোল খালি হচ্ছে। এমনই একজন আদম ব্যবসায়ী নরওয়ের জুনায়েদ। নরওয়ের বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুমিনুর রহমান জুনায়েদ বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাত করে নরওয়ে থেকে পলাতক রয়েছে বর্তমানে। নরওয়ে পুলিশের নিকট জুনায়েদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি সহ নানাবিধ গুরুতর প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।
জুনায়েদ গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ এবং ইউরোপের মধ্যে আদম ব্যবসা করে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় নরওয়েসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে তাদের আত্মীয় স্বজনদের ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিয়ে আসার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে পলাতক রয়েছে। যার প্রেক্ষাপটে নরওয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশ জুনায়েদের ভিসা নবায়ন বন্ধসহ তাকে কালো তালিকাভুক্ত করে।
আরো জানা যায়, সে রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, চেক রিপাবলিক, বাংলাদেশসহ অনেকগুলো দেশে টাকার বিনিময়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে রোমানিয়া ও বুলগেরিয়ান স্ত্রীদের পরিবারের পক্ষ থেকে নরওয়ে পুলিশের নিকট অভিযোগ দ্বায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া নরওয়ে,সুইডেন, ডেনমার্ক, স্কটল্যান্ড সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী অনেক বাংলাদেশী পরিবারের নিকট হতে জুনায়েদ মোটা অংকের টাকা আত্মসাত করেছেন। এই মূহুর্তে ভুক্তভোগীরা জুনায়েদকে হন্য হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। ইউরোপের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় গ্রুপগুলোতে জুনায়েদ সংক্রান্ত সতর্কবার্তা জারী করা হয়েছে।
গত ২০২০ সালে ০৮ই জুন লিবিয়ায় বাংলাদেশী অভিবাসী প্রত্যাশী হতাহতের ঘটনায় মানব পাচারকারীদের মধ্যও জুনায়েদের নাম রয়েছে মমেৃ জানা যায় এবং বর্তমানে নরওয়ের আইনে কালো তালিকায় রয়েছেন বলে জানা যায়। নরওয়ের সকল বসবাসরত বাংলাদেশীদের পক্ষ হতে ইতিমধ্যে তাকে খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। নরওয়ে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে অনেক ভুক্তভোগী জুনায়েদকে ধরে পুলিশের নিকটে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক ভুক্তভোগী ফোন করেও ফোন নাম্বারটি বন্ধ রয়েছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে নরওয়ের বাংলাদেশ কমিউনিটির সভাপতি, জনাব বাদল ভুঁইয়ার কাছে আমরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনার সত্যতা রয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে ঘটনা সত্যতা যাচাই করার জন্য আমরা জনাব জুনায়েদের সাথে নরওয়ের ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকার কারনে যোগাযোগে ব্যর্থ হই। প্রবাসে বাংলাদেশীদের এই ধরনের কর্মকান্ডের কারনে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী কমিউনিটিরা সামাজিকভাবে বিতর্কিত হবেন বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন নরওয়ের বাংলাদেশ কমিউনিটির সভাপতি, জনাব বাদল ভুঁইয়াসহ আরও অনেকে।