1. xsongbad@gmail.com : Harry Deb Nath : Harry Deb Nath
  2. tauhidcrt8@gmail.com : tauhidcrt8 :
রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৯:৫১ অপরাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি:
  • Welcome To Our Website...* এন জি ও ‘আরবান সমিতি’ –মাইক্রো ক্রেডিট ফাইনান্সে জরুরী ভিত্তিতে কিছু সংখ্যক মহিলা/পুরুষ মাঠ কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে। বয়স ২৫ উর্ধ্ব হতে হবে। আগ্রহী প্রার্থীদেরকে সরাসরি নিম্নোক্ত নাম্বারে যোগাযোগ করুনঃ ০১৩০১০৪১২৮৮  আমাদের অনলাইন নিউজ পোর্টালে বিজ্ঞাপন দিতে চাইলে এই নাম্বারে যোগাযোগ করুনঃ ০১৮১৫-৫৮৭৪১০

সাতকানিয়াই রাজাকার নাতনি চান নৌকা প্রতীক।

নিজস্ব প্রতিনিধি চট্টগ্রাম মহানগর
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২২
  • ২০৯ বার ভিউ

নিজস্ব প্রতিনিধি চট্টগ্রাম মহানগর সাতকানিয়ায় রাজাকারের নাতি এবারও চান নৌকার টিকিট, দলের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও ভরসা অন্যখানেদুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ থাকলেও পার পেয়ে যাচ্ছেন কৌশলে।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় রাজাকার পরিবারের সন্তান এবারও চাইছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। চেয়ারম্যান স্বামীর মৃত্যুর পর সহানুভূতিকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও তিনি পাত্তাই দেন না দলের নেতাকর্মীদের— এমন অভিযোগ রয়েছে বরাবরই। এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে উঠেছে নানা অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। এমনকি ইউপি সদস্যদের ভাতা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

তিনি সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান তসলিমা আবছার। একইসঙ্গে তার আরেকটি পরিচয় হচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ উপজেলা ইউনিট কমান্ডের তালিকাভুক্ত রাজাকারের নাতিন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই তার বিরুদ্ধে তৃণমূল আওয়ামী লীগের অভিযোগ রয়েছে, নৌকার টিকিটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েও দলীয় নেতাকর্মীদের পাত্তা দেন না তসলিমা। সাতকানিয়াই দলের তৃণমূল নেতা কর্মীরা এবারের নির্বাচনে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ কাউকে নৌকার টিকিট দেওয়ার দাবী জানান।
জানা গেছে, তসলিমা আবছারের দাদা মৃত আলী আহমদ ছিলেন রাজাকার। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাতকানিয়া উপজেলা ইউনিট কমান্ডের রাজাকারের তালিকায় মৃত আলী আহমদের নাম রয়েছে ১৩ নম্বরে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাতকানিয়া উপজেলা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার আবু তাহের এলএমজিও।

কমান্ডার আবু তাহের বলেন, রাজাকারের নাতিন হয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের সমর্থন নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করা আমাদের গালে চপেটাঘাতের মতো। স্বামীর মৃত্যুর পর সাধারণ মানুষের সহানুভূতিকে পুঁজি করে তসলিমা অনেক বেশি বেপরোয়া ও উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। যার খেসারত দিচ্ছে ইউনিয়নবাসী। আমরা এই অবস্থার পরিবর্তন চাই।
নলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দাদের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১০ বছর ধরে সাতকানিয়ার ৩নং নলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তসলিমা আবছার। দীর্ঘদিন থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও এলাকায় তার কোনো জনপ্রিয়তা নেই। কারণ তিনি এমন কোনো পরিবার ও ভাবমূর্তির কেউ নন যে স্থানীয়রা তাকে বারবার নির্বাচিত করবেন। তার একমাত্র পুঁজি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শীর্ষ একাধিক নেতার সাথে ব্যক্তিগত সখ্য ও সহানুভূতি। তাই বিভিন্ন অনিয়ম করেও বারবার ছাড় পান তিনি। মনোনয়ন পান নৌকার। আর এই নৌকার উপর ভর করেই তিনি পেরিয়ে যান নির্বাচনী বৈতরণী। তাই তিনিও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীকে মূল্যায়ন করেন না। পাত্তা দেন না থানা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদেরও। এমনকি আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর সঙ্গেও দলীয় ভালো সম্পর্ক নেই তার।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এমনকি দলীয় টিকিটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী সমর্থকদের ওপর করেন ক্ষমতার অপব্যবহার। অথচ এর বিপরীতে বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মীদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়ক ভুমিকা পালন করেন। স্থানীয়রা এ অবস্থার পরিবর্তন চান। এবারের ইউপি নির্বাচনে ত্যাগী নেতারা যেন দলীয় মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এমন দাবি রেখেছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, ২০১১ সালের জুনে নলুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তসলিমার স্বামী নুরুল আবছার। একই বছরের ২৫ ডিসেম্বর রাতে তিনি ডাকাতের গুলিতে নিহত হন। ২০১২ সালের এপ্রিলে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে ভোটারদের সহানুভূতি নিয়ে নির্বাচিত হন তসলিমা। মূলত সেই থেকে শুরু। পরবর্তীতে নৌকার টিকিট পেয়ে দলীয় মনোনয়ন পান তিনি। সেই থেকে টানা দুই মেয়াদে প্রায় ১০ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দলীয় টিকিটে নির্বাচিত হলেও দলের নেতাকর্মীরা তার কাছে মূল্যায়িত হন না।

এলাকাবাসীর কাছ থেকে বিভিন্ন অভিযোগে জানা গেছে, পুরো নলুয়া ইউনিয়ন পরিষদকে তসলিমা আবছার রীতিমতো দুর্নীতির আখড়া হিসেবে গড়ে তুলেছেন। প্রচ্ছন্ন স্বজনপ্রীতিসহ নানা বৈষম্য তৈরি করে রেখেছেন ইউনিয়নজুড়ে। তার বাড়ির আশপাশে সরকারি অর্থে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করা হলেও অন্য এলাকাগুলো উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত। ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ এলইডি বাতিগুলো স্থাপন করা হয়েছে তার বাড়ির আশেপাশে। প্রতিবছর টিআর কাবিখার বরাদ্দগুলো আত্মসাৎ করা হয়েছে।
জানা গেছে, নলুয়া ইউনিয়নের আওতাধীন ধানি জমির মাটি পর্যন্ত বিক্রি করেছেন টাকার বিনিময়ে। মোটা অংকের টাকা নিয়ে ইটভাটা স্থাপনে সহযোগিতা করেছেন জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, জাতীয়তা সনদ দেওয়া হয় টাকার বিনিময়ে। এভাবে লাগাতার দুর্নীতির মাধ্যমে স্বামী হারিয়ে নিঃস্ব তসলিমা এখন কোটি টাকার মালিক। তাই দলীয় কাউকে পাত্তা দেন না। তিনি শুধু কেন্দ্রীয় কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে চলেন সবসময়। তাদের সাথে গড়ে তুলেছেন ব্যক্তিগত সখ্য। স্থানীয় নেতাকর্মীরা নয়, মূলত ওই কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাই এখন তসলিমার শক্তি— এমন অভিযোগ তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের।

তাদের অভিযোগ, দলীয় সমর্থনে মনোনয়ন আদায়ে কেন্দ্রীয় ওই নেতারাই তসলিমাকে সহযোগিতা করে থাকেন। দলীয় হাইকমান্ডকে বিভ্রান্ত করেন ভুল তথ্য দিয়ে। একই কায়দায় এবারও দলীয় মনোনয়ন পারেন এমনটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন তসলিমার ঘনিষ্ঠমহল।
জানা গেছে, এলাকায় গণসংযোগের চেয়ে তসলিমা এখন ঢাকায় তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে যোগাযোগকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। নির্বাচনী এলাকার চেয়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন বেশি। মাঝে মাঝে এলাকায় এসে বলে বেড়াচ্ছেন এবারও দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত তিনিই পাবেন।

অভিযোগে জানা গেছে, নলুয়া ইউনিয়নের অন্যান্য নির্বাচিত সদস্যদের মাসিক সম্মানীর টাকাও তসলিমা আত্মসাৎ করে যাচ্ছে বছরের পর বছর। প্রত্যেক সদস্যের সম্মানীভাতা হিসেবে ইউপি অংশে মাসিক ৪ হাজার ৪০০ টাকা দেওয়ার কথা। এ সংক্রান্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপনও প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিকার চেয়ে সদস্যরা লিখিত আবেদনও করেছেন। কিন্তু প্রতিকার পাওয়া যায়নি।
৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল আজীজ কাবিখার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। ওই আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ওই ওয়ার্ডের আবদুল আজীজ সওদাগর সড়কের বেহাল অবস্থা হওয়ায় স্থানীয়রা চেয়ারম্যানের কাছে সংস্কারের আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাবিখার একটি প্রকল্প দেন তসলিমা। কিন্তু লোকদেখানো মাটি ফেলে পুরো প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করা হয়। তাই স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আজীজ জেলা প্রশাসকের কাছে প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন।

এ বিষয়ে ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য করিম চৌধুরী বলেন, এখনও আমরা আমাদের সম্মানীর টাকা পাচ্ছি না। এ নিয়ে কথা তুললে অপমানিত হতে হয় চেয়ারম্যানের কাছে। ক্ষমতা দেখিয়ে শাসান। লিখিত আবেদন করেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে তার অভিযোগ।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নলুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তসলিমা আবছার। তিনি বলেন, একটি পক্ষ আমাকে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র করছে। তাদের অপচেষ্টা সফল হবে না। আমার বিশ্বাস দলীয় মনোনয়ন বোর্ড এবারও আমাকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেবে। আমার প্রতি দলের সেই বিশ্বাস আছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর