চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধি: ইসমাইল ইমন চট্রগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় শীতের মৌসুমে আগাম জাতের আলুর বাম্পার ফলন হলেও বর্তমানে কৃষকের চোখে আতংকের ছাপ। মৌসুমের শুরুতেই আলুর বাজার দর নিন্মমুখী হওয়ায় বিপাকে স্থানীয় কৃষকরা। এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে ২০ কেজি আলু দিয়ে এক লিটার সয়াবিন তেল। প্রকার ভেদে কোথাও আলুর কেজি ৭ টাকা,আবার কোথাও ৮ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। চন্দনাইশ উপজেলার খাগড়িয়া,চরতি,চাগাচর,চর বর্মা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়।যে আশা নিয়ে মোটা অংকের অর্থ ঋন নিয়ে আলুর চাষ করেছিলেন, বর্তমানে হাট বাজারের আলুর দাম দেখে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরার মত অবস্থা।ঋনের টাকা কেমনে উঠাবো বুঝতে পারছি না।
বাজারে নতুন আলুর দাম নিম্নমুখী হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশার ছাপ। অন্যান্য বছরের তুলনায় গত বছরও শুরুতে আলুর দাম ভালো থাকায় এবং এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় অধিক লাভের আশায় কৃষকেরা কোমর বেঁধে আলু চাষে নেমেছিলেন। কিন্তু এবছরের শুরুতেই আগাম জাতের নতুন আলুর দাম কম হওয়ায় ভরা মৌসুমে আলুর বাজার নিয়ে কৃষকের বাড়ছে দুশ্চিন্তা চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ।মৌসুমের শুরুতে আলুর কেজি ৩০থেকে ৪০টাকা বিক্রি হলেও বাজারে বর্তমানে ৮/ ১০ টাকায় নেমে এসেছে। ভরা মৌসুমেও আলুর দাম নিয়ে তাই চরম শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকেরা।দোহাজারী রেল স্টেশন মাঠের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আলু নিয়ে চাষিরা ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও ক্রেতা পাচ্ছেন না তেমন, স্থানীয় সবজি আড়তদার সোবহান জানান, চন্দনাইশের দু’টি আলুর হিমাগার রয়েছে। গত বছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় অনেকের আলু এখনো রয়েছে হিমাগারে, সেখান থেকেও আলু বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে প্রচুর পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে কৃষকেরা।
খাগরিয়া এলাকার কৃষক মোঃ হোসেন জানান, এক বুক আশা নিয়ে আলু বিক্রি করতে গেছি স্থানীয় হাঁটে। তবে হাঁটে গিয়ে আশাহত হয়ে বাড়ি ফিরতে হলো।কৃষকেরা জানান, এক বিঘা জমিতে আগাম আলু উৎপাদন করতে সাধারণত ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। গড়ে এক বিঘা জমিতে ৭৫ মণ আলু উৎপাদন হয়। সে হিসাবে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়ে ১০ টাকার বেশি। অথচ এ শীত মৌসুমে অন্যান্য সবজির দাম বাড়তি থাকলেও আলুর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। অনেকেই লাভের আশায় চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। সংরক্ষিত আলু বাজারজাত না করতে পারলে বিপুল পরিমাণ আলু অবিক্রিত থেকে যাবে। ন্যায্যমূল্য না পেলে চাষিরা আগামিতে আলু চাষে নিরুৎসাহিত হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় শীতকালীন সবজি আলুর ফলন ভাল হয়েছে। চন্দনাইশের উৎপাদিত আলু দেশের বিভিন্ন জেলার চাহিদা পূরণ করে থাকে। তাছাড়া চন্দনাইশে বড় ধরণের দুইটি হিমাগারে আলু রাখার সুযোগ রয়েছে।