চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট কে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের নেওয়া কর্মসূচির আজ ১৪তম দিন। এখনো পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সঠিক সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি তাই ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের শৈল্পিক আন্দোলন বা শিল্প কর্ম দ্বারা আন্দোলনের ভাব প্রকাশ করে কর্মসূচি পালন অব্যহত রেখেছেন। এর আগে গত ১০ তারিখ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট এর মূল ফটক বাদশা মিয়া সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এবং ১১ তারিখ শুক্রবার দফায় দফায় বৈঠক হয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সাথে।
দীর্ঘ সময় মিটিং শেষে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনার জন্য ১২ সদস্যদের একটি কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মামুনকে আহ্বায়ক এবং ঢালি আল মামুন, সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব, মরিয়ম লিজা, চারুকলা ইনস্টিটিউট পরিচালক অধ্যাপক প্রণব মিত্র চৌধুরীসহ বিভাগের বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে সদস্য করে এ কমিটি গঠন করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তা নাকচ করে এবং তারা তাদের এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শৈল্পিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় শিক্ষক রা চায় না চারুকলা ইনস্টিটিউট কে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করতে,তাই শিক্ষার্থীদের সাথে কর্তৃপক্ষের বহুবার আলোচনা পর্যালোচনার পরেও সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে দুইদিন সময় নিলেও চারুকলাকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরসহ ২২ দফা দাবির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না জানিয়ে ইনস্টিটিউট ত্যাগ করেন চারুকলার শিক্ষকরা। জানা গেছে, চারুকলা ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কমিটির সভাতেও শিক্ষকরা চারুকলা ইনস্টিটিউটকে ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের বিষয়ে একমত হতে পারেননি। তাই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবস্থান এখন বিপরীতমুখী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট এর এক ছাত্রের সাথে কথা বলে সংবাদ জগৎ তার কথার ধরন টা ছিল অনেকটা এমন; প্রথম প্রথম আন্দোলন এর সময় শিক্ষক রা আমাদের সাথে একমত পোষণ করে এবং তারাই বলেছেন যে আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক কিন্তু আমাদের এই ২২ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হলে সর্বপ্রথম মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করতে হবে এবং মূল ক্যাম্পাসে বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে কিন্তু শিক্ষকরা চাচ্ছেন না চারুকলা কে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করা হোক কারন সবার ঘরবাড়ি আশেপাশে আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ১:৩০ থেকে ২:০০ ঘন্টার পথ। তারা হিসেব করে দেখেছেন হয়তো যে শিক্ষকদের এই দের থেকে দু ঘন্টা সময় কষ্ট টা করতে হবে না যদি চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে ফিরে না যায়। আর অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবার ভয়ই তাদের কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধা প্রদান করছে! সেই শিক্ষার্থী আরো জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর মূল ক্যাম্পাস একটি মহাজগতের মতো কিন্তু সেই তুলনায় বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউট কিছুই না শিক্ষার্থীরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না এবং এটি একটি বড় সমস্যা শিল্প শিক্ষার ক্ষেত্রে, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও বিশ্ববিদ্যালয় এর পরিবেশে যদি ক্লাস করতে না পারি তাহলে অন্তত এই ভাঙাচোরা দালান যেটি কিনা যে কোন সময় দুর্ঘটনার কারন হয়ে দাঁড়াবে’ সেখানে ক্লাস করবো না আমরা গত ১৪ দিন যাবৎ ক্লাসের বাইরে ক্লাস করছি এবং এভাবেই ক্লাস করবো যতদিন না আমাদের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তোলেন আন্দোলনের স্লোগান এর মতো করে এবং তারা তাদের সব শিল্পকর্মের মধ্যেই তাদের দাবি বাস্তবায়ন করার অনুরোধ প্রকাশ করেছেন। তারা আরো জানান অতি শিঘ্রই মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত করতে হবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা ইনস্টিটিউট কে এবং তারা তাদের এই শৈল্পিক আন্দোলন ততদিন পর্যন্ত অব্যাহত রাখবে।
মোঃ মাকসুদ ইসলাম ফাহিম
সংবাদ জগৎ চট্টগ্রাম