“ও আব্বুরে, আমার বাবা ছাড়া আমার আর কেউ নাই…!” পরকীয়ার অন্তিম পরিণতিতে খুন হওয়া নিহত দশ বছরের নাবালক রাকিবের মায়ের আর্তধ্বনি।
গত শনিবার হতে নিখোঁজ রাকিব। চারিপাশ তুলোধুনা করে তাকে খোঁজা হয়। তারপরেও তার হদিস মেলে না। সে সচরাচর সন্ধ্যা ছয়টা বা আট্টার মধ্যে বাসায় ফিরে। বরজোড় রাত নয়টা। সেদিন মা আমেনা রাত দশটা অবধি পথপানে চেয়ে থাকে। কিন্তু কে জানে মায়ের এই প্রতিক্ষার পালা আর হয়তো হবে না!
তিন ভাই-বোনদের মাঝে রাকিব মাতা-পিতার একমাত্র পুত্র সন্তান। সবেমাত্র ক্লাস ওয়ানে পড়ে সে। মাস তিনেক আগে আব্বু আম্মুকে ডিভোর্স দেয়। বউ নিয়ে তিনি এখন ঢাকায় থাকেন। আব্বু আম্মুকে ডিভোর্স দেয়ার পর আম্মু শাকিল (২০) নামে এক যুবকে দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে গ্রহণ করে। সপ্তাহ খানেকঅ হয় নাই। আম্মুর সাথে মনোমালিন্য শুরু হওয়ার সপ্তা খানিক পর গায়েব হয়ে যায়।
এরি মাঝে প্রথম স্বামীর চাচাতো ভাই, ইব্রাহিম আমাদের ঘরে প্রায়ই আসা-যাওয়া করত। নানা সময় আম্মুকে কুপ্রস্তাব দিত। একদিন আম্মু তাকে বুঝান, “আমার ঘরে বিয়া লাইগ্যা মাইয়া আছে। আসেপাশের লোকজন খারাপ বলে। ঘরে না আসলেই ভাল হয়। এতে আম্মু তাতে সাই না দিলে তিনি আম্মুকে প্রাণনাশের হুমকি দিতেন।
এর কিছুদিন পরেই ভাইয়্যা নিখোঁজ হয়। ভাইয়্যা নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পর, অচেনা নাম্বার হতে আম্মুকে কল দিয়ে একজন জানাই, ছেলেকে বাচাঁতে চাইলে টাকা নিয়ে আসেন।
একদিন সকালবেলা। প্রতিবেশি এক লোক এসে আমারে (রাকিবের বড় বোন) কই, “ঐ পুকুরে এক মৃত বাচ্চার লাশ পাওয়া গেছে। দ্যাখ, এটা তোর ভাই কিনা।“ আমরা দৌড়ে যাই। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ডোবা পুকুর হতে পাথর দিয়ে ডোবানো ওই বস্তাটির মুখ খোলে দেখি…ভাই আর নেই। তার নাকে রক্ত। পা-জোড়া জলে ফুলে বালিশ হয়ে যায়। মা আর্তনাদ করে বলে ওঠে,” আল্লা, ও আল্লা। তুমি কোথায় আছ? এ-কি তোমার বিচার! এ শিশুর মৃত্যু তুমি ক্যামনে সহ্য করলা মাবুদ!”